নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ০৬ জুন ২০২৪ | প্রিন্ট
করোনার ধাক্কা সামলে না উঠতেই বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দায় আরো বেশি প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। এতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশেও।
এমন কঠিন সময়ে ভোগ্যপণ্য, জ্বালানি থেকে শুরু করে দাম বেড়েছে সব ধরনের পণ্যের। তবে বেসরকারি চাকরিজীবীদের বেতন তেমন বাড়েনি। কারো কারো হয়ত বাড়লেও দ্রব্যমূল্যের সমানুপাতিকহারে বাড়েনি। এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্ভিক্ষের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য সচকিত করে তুলেছে সাধারণ মানুষকে। তাই সাধারণ মানুষের প্রস্তুতি শুরু হওয়া দরকার এখন থেকেই। সংসারের বাড়তি খরচ কমিয়ে ফেলি ভবিষ্যতের শঙ্কা।
চলুন জেনে নিই সংসারের খরচ কমানোর কয়েকটি উপায়-
> মাসের শুরুতেই একটি বাজেট করে ফেলা দরকার। সম্ভব হলে সারাবছরের। পরিবারের সবার মতামত নিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তারিকা করে ফেলুন। পাশাপাশি অবশ্যই রাখবেন সঞ্চয়ের খাত আর সেই সঙ্গে জরুরি প্রয়োজনের জন্যে আলাদা একটা বরাদ্দ রাখুন। বছর শেষে ওই টাকাটা বেঁচে গেলে সেটি পাঠিয়ে দিন সঞ্চয়ের ঝুলিতে।
> অনেকেই ডেবিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে কেনাকাটা করেন। এতে অতিরিক্ত খরচ হযে যায়। একবারে বেশি মনে না হলেও মাস শেষে যোগ করে দেখুন একটি বড় অংক এখানে চলে যাচ্ছে। এই বাড়তি খরচ ফেলতে পারে মহাবিপদে। তাই চেষ্টা করুন কার্ড ব্যবহার না করে নগদে কেনাকাটা করার।
> সাশ্রয়ী হতে হবে সব দিক থেকেই। গরমে এসি বা ফ্যানের কারণে বিদ্যুৎ বিল একটু বেশি বেড়ে যায়। যা এই সময় একটা বড় খরচের খাত। তাই যেসব ডিভাইস ব্যবহার করছেন, সেগুলো ব্যবহার করার পরে বন্ধ করে দিন। এসি ছাড়াই কীভাবে ঘর ঠান্ডা করা যায়, তা চিন্তা করুন। এতে আপনার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পাশাপাশি অর্থ সাশ্রয় হবে। রাতে ঘুমানোর আগে বাথরুমের লাইট বন্ধ করেছেন কিনা দেখে নিন। বাসায় এলইডি বাল্ব ব্যবহার করুন। তাতে আপনার বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত।
> বাসায় থাকা অপ্রয়োজনীয় বস্তু বিক্রি করে দিন। প্রতি মাসে কেনা তেলের বোতল, বস্তা, খবরের কাগজ এগুলো একেবারেই অপ্রয়োজনীয়, তাই এগুলো বিক্রি করে দিতে পারেন।
> অনেকেই কেনাকাটার ভাউচার সংরক্ষণ করেন না। তবে এখন থেকে সংরক্ষণ করুন। মাস শেষে ভাউচার দেখে আপনার আয় ব্যয় সম্পর্কে ভালো ধারণা লাভ করতে পারেন। এটা দিয়ে কোথায় আপনার খরচ বেশি হচ্ছে বা কোথায় আপনার খরচ কমানো দরকার সেটা সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
> অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাদ দিন। যদি অনলাইনে সংবাদ পড়ে থাকেন তাহলে খবরের কাগজ না নেয়াই ভালো। জিমে নিয়মিত না গেলে সদস্যপদ বাতিল করুন। মোবাইল ইন্টারনেট প্যাক ব্যবহার করলে বাসায় ব্রডব্র্যান্ডের খরচ কমাতে পারেন। তা ছাড়া মোবাইলের ডাটা সব সময় সচল না রেখে কাজ শেষে অফ করে রাখুন। তাতে আপনার ইন্টারনেটের খরচও কমবে। ব্যবহারের পর ডাটা কানেকশন সচল থাকলেই আপনার ইন্টারনেট অযথা ব্যয় হবে।
> বাইরের খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা আজই ত্যাগ করুন। বাইরের খাবার স্বাস্থ্য ও পকেট দুটোর জন্যই ক্ষতিকর। বাসায় তৈরি করা খাবার খান। অফিসেও বাসায় তৈরি করা খাবার নিতে পারেন। এতে আপনার খরচ অনেকটাই কমে আসবে।
> কেনাকাটার সময় বিভিন্ন উপলক্ষ বা আয়োজনকে কেন্দ্র করে কিনুন। এতে মূল্যছাড় পাবেন। টানাটানির সংসারে মূল্যছাড়ের সময় কেনাকাটা করলে অনেক সাশ্রয় হয়। কোনো গিফট ভাউচার পেলে সেটাও ব্যবহার করুন।
> প্রতি সপ্তাহে ঘুরাঘুরি করে টাকা নষ্ট না করে ঘরেও আয়োজন করতে পারেন স্বল্প খরচের মধ্যে। অথবা দলবেঁধে ঘুরতে যেতে পারেন। এতে খরচ খানিকটা কম হয়। সেই সঙ্গে বছরের কোন কোন সময় ঘুরতে যাবেন তারও একটি বাজেট তৈরি করে রাখতে পারেন।
Posted ৬:৫৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ জুন ২০২৪
শিক্ষার আলো ডট কম | শিক্ষার আলো